14.7 C
Toronto
শুক্রবার, মে ৯, ২০২৫

ইন্টার্নী শেষ করে

ইন্টার্নী শেষ করে - the Bengali Times
একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম কবে সবার সাথে দেখা হবে

আর তিন বছর পর ৫০ বছর হবে আমরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষ এম বি বি এস কোর্সে ভর্তি হয়েছিলাম। ইর্ন্টানী শেষ করে ১৯৮৫ তে চলে এসে যোগ দিয়েছিলাম বি সি এস হেলথ্ ক্যাডারে। এর পর ৪০/৪৫ বছর কেটে গেল অনেক বন্ধুদের সাথে দেখা যেমন হয়নি দেখা হয়নি ‘চক্ষু মেলিয়া’ প্রিয় ময়মনসিংহ শহরটাকেও। ২০০০ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাকুরী কালীন সময়ে একবার ময়মনসিংহ গিয়েছিলাম উপজেলার ডাক্তারদের  প্রশিক্ষন দেয়ার জন্য। তারপর দীর্ঘ সময়।

একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম কবে সবার সাথে দেখা হবে। আমাদের ব্যাচ এম-১৫। বন্ধুরা প্রতিবছরই একত্রিত হয় বাংলাদেশে আমি যেতে পারিনা সময়, চাকরী আর দূরত্বের কারনে। এবার অপেক্ষার পালা শেষ হলো। ১৮ ফেব্রুয়ারী ঢাকা নামলাম ২০ তারিখে ময়মনসিংহ চলে গেলাম। আমার মেডিকেল সহপাঠী অবসর প্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডেভিড বিভুতোষ আমাকে তার গাড়ীতে করে নিয়ে গেল। আমি, ডেভিড, ডা: ভাবী ( ডেভিডের স্ত্রী) একসাথেই চললাম ময়মনসিংহের পথে ডেভিড ও আমাদের অন্য বন্ধুদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় গড়া একটি উন্নতমানের হাসপাতাল গাজীপুরে কিছু সময় ঘুরলাম, দেখলাম এবং  দুপুরের খাবার খেয়ে তারপর আবার রওনা দিলাম।

- Advertisement -

সেদিন সন্ধায় আমরা ময়মনসিংহ পৌছালাম। আমার জন্য হোটেলের একটি রুম বরাদ্দ ছিলো আমি সেখানে দুই রাত ছিলাম। ২০ তারিখ সন্ধায় মতি এবং আয়োজক কমিটির অন্য বন্ধুরা স্থানীয় একটি হোটেল “আভন্তি” তে আমাদের উপস্থিত বন্ধুদের কে আপ্যায়ন করলো। পরদিন ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে মেডিকেল কলেজ চত্বরে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে আমাদের দিনের অনুষ্ঠান শুরু হলো। আমরা প্রভাত ফেরী করলাম এবং মেডিকেল চত্বর ঘুরে দেখলাম।

আশেপাশে অনেক উচু ভবন হয়েছে ক্যাম্পাসের মধ্যেই । এগুলো দেখে ভালোই লেগেছে আবার কষ্টও পেয়েছি কারণ আমাদের চির চেনা ক্যাম্পাসের আসল রুপ হারিয়ে গেছে এসবের আড়ালে। তবু ভালো লেগেছে দেশের অগ্রযাত্রা দেখে। অনুষ্ঠানের মাঝে দুপুরে একবার বাগমারা হোষ্টেলে ওয়েষ্ট ব্লকে গেলাম যেখানে আমি ছিলাম সে ঘরটি দেখতে। একজন ছাত্র ঘুমিয়ে ছিলো ঠিক আমি যে বেডটিতে ঘুমাতাম সেখানে। তাকে ডেকে উঠালাম তার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে আবার অনুষ্ঠানে ফিরে এলাম। এরই মাঝে কত কিছু মনে পড়লো-কৃষ্ণা কেবিন, রেল ষ্টেশন,  প্রিয় নাটক ঘর লেন, প্রেস ক্লাব এর কথা। সময় অভাবের কারনে সে দিকে আর যাওয়া হয়নি। ছোট্ট ময়মনসিংহ শহরের ট্রাফিক জ্যাম দেখলে ভয় হয় কারন ওর ভিতর একবার পড়লে ওখান থেকে বেরিয়ে আসা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

বন্ধুদের সাথে অনেক ছবি ওঠানো হলো অনেক স্মৃতিচারন করা  হলো। দুপুরের খাবার, সকালের নাস্তা সবই ছিলো পরিপাটি আর দক্ষ ব্যবস্থাপনার মধ্যে। আমদের বন্ধু ডা: সাঈদুর, ডা: মেজবা, ডা: মতি, ডা: নজরুল ইসলাম (শিশু বিশেষজ্ঞ) এবং যে টিম কাজ করেছিলো তাদের সবাই এর জন্য ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা থাকবে আজীবন।

সে দিন বিকালে বন্ধু কবি ও সাহিত্যিক ডা: জিয়ার সঞ্চালনায় একটি ছোট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে সবাই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিল। আমি হোটেলে রাতটা রয়ে গেলাম। বন্ধু ডা: মেসবাহ আর ছোট ভাই ডা: মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর আমন্ত্রণে।

 

ইয়েলোনাইফ, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles