19 C
Toronto
মঙ্গলবার, মে ৬, ২০২৫

খুনের পর স্বামীর লাশে সুগন্ধি মেখে ৭ দিন ঘরে রাখেন স্ত্রী

খুনের পর স্বামীর লাশে সুগন্ধি মেখে ৭ দিন ঘরে রাখেন স্ত্রী - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

চট্টগ্রামে সূত্রবিহীন একটি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি। ২০১৭ সালের ১৮ আগস্ট স্বামী নাজিম উদ্দিনকে দরজার চৌকাঠের সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে খুন করেন তার স্ত্রী নাছিমা আক্তার। খুন করার পর কম্বল মুড়িয়ে লাশে সুগন্ধি মাখিয়ে সাতদিন ঘরেই গুম করে রাখেন ওই নারী।

পরে লাশ ফেলা হয় বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত পুকুরে। পুকুর থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় নাজিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে নাজিমকে দাফন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

- Advertisement -

এ ঘটনায় সোমবার (৫ মে) নাছিমা আক্তার ও তার দেবর জসিম উদ্দিন এবং আবুল কালাম নামে সিএনজি অটোরিকশা চালককে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর এই তথ্য পেয়েছে সিআইডি। গ্রেপ্তারের পর স্বামীকে খুনের বর্ণনা দিয়ে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪২)।

সিআইডি জানায়, নিহত নাজিম উদ্দিন দীর্ঘদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিলেন। উচ্চমাধ্যমিকে পড়া তার এক ছেলে নিখোঁজ হয়। পরে বিষয়টি জানতে পেরে স্ত্রীকে না জানিয়ে ২০১৭ সালের জুনে চট্টগ্রামের রাউজানের দক্ষিণ সর্ত্তা গ্রামের বাড়িতে আসেন নাজিম। ছেলে নিখোঁজের বিষয়টি না জানানোর কারণে স্ত্রীর ওপর ক্ষুব্ধ হন তিনি। স্ত্রীও এভাবে স্বামীর দেশে আসা মেনে নিতে পারেননি। সংসার খরচ চালানো, ঋণ পরিশোধ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয় নাছিমার।

ঘটনার দিন নাছিমাকে ঝগড়ার একপর্যায়ে চড় মারেন স্বামী নাজিম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাজিমকে ঘরের দরজার চৌকাঠের সঙ্গে ধাক্কা দেন নাছিমা। মাথায় আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নাজিম। রক্তক্ষরণে মারা যান। ওই সময় ঘরে স্বামী–স্ত্রী ছাড়া কেউ ছিলেন না। স্ত্রী নাছিমা স্বামীর লাশ পার্শ্ববর্তী মালামাল রাখার ঘরে নিয়ে যান। কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখা লাশ থেকে কোনো দুর্গন্ধ যেন বের না হয়, এ জন্য নানা রকম সুগন্ধি ব্যবহার করেন। এভাবে সাত দিন ওই ঘরে রেখে দেন। ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকা রক্ত মুছে ফেলেন। পুড়িয়ে ফেলেন নাজিমের পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়ে ঘরে এলে তাদের জানানো হয় তাদের বাবা আবার বিদেশ চলে গেছেন।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা জানান, নাজিম উদ্দীন হত্যা মামলাটি প্রথমে থানা–পুলিশ তদন্ত করে। দু’বছর পর সিআইডিতে আসে তদন্তের জন্য।

সূত্রবিহীন এ মামলার তদন্তে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়। স্ত্রী নাছিমা আক্তার স্বামীকে খুনের বর্ণনা দিয়ে সোমবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles