
আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বাউফলের সুধির নন্দী। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাকে ঘিরে শতাধিক নেতিবাচক পোস্ট দেখা গেছে, যার অনেকগুলোর সাথেই সংযুক্ত রয়েছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তোলা তার একাধিক ছবি।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে জন্মগ্রহণ করা সুধির বর্তমানে পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপাড়ায় বসবাস করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দলীয় প্রচারণার কাজে নিজেকে যুক্ত করে বাউফল ছাড়িয়ে পটুয়াখালী জেলায় পরিচিতি পান।
জানা গেছে, একসময় বৈশাখী সিনেমা হলে মাইকিংয়ের কাজ করতেন সুধির। সেখান থেকে শুরু হয় তার রাজনৈতিক প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানো। এই সূত্র ধরে তার পরিচয় হয় বাউফলের সাবেক এমপি ও চিফ হুইপ আসম ফিরোজের সঙ্গে। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ে উঠলে তিনি শেখ হাসিনার সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পান। দলীয় সভানেত্রীকে “মা” বলে সম্বোধন করে তিনি তার দৃষ্টিতে আসেন এবং একাধিকবার ছবিও তোলেন।
এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে— ওসি, এসপি, ডিআইজি, ইউএনও, ডিসি থেকে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত— তার প্রভাব বিস্তার ঘটে। অনেকে বলছেন, এই প্রভাবকে পুঁজি করে শূন্য থেকে কোটিপতিতে রূপান্তরিত হন সুধির নন্দী।
তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকেই সুধির নন্দী আত্মগোপনে চলে যান। প্রায় এক মাস আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে লুকিয়ে থাকার পর ফের প্রকাশ্যে আসেন।
সম্প্রতি তার এই ফিরে আসা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ফেসবুকে অসংখ্য পোস্টে তার ছবি ও পুরনো কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
সাগর নামের এক যুবক তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, “ক্ষমতার দাপটে ১৮ সালে ভোট দিতে পারি নাই। তিনি ছিলেন দাসপাড়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে। দাঁড়িয়ে থেকে জোর করে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে নৌকায় সিল মারতেন। এই সেই সুধির, ভুলি নাই, ভুলবো না।”
নাজমুল ইসলাম মিল্টন মন্তব্য করেন, “সুধির নাকি এখন বাউফল জামায়াত ইসলামের বর্তমান নায়েবে আমীর! বিষয়টা ভাবতেই মনাফেকদের আসল চেহারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির স্থানীয় নেতা মুহাম্মদ জাকির হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক নেতা ফাহাদের একটি ভিডিওর প্রসঙ্গ টেনে লেখেন, “তোমার আপলোড করা ভিডিওতে সুধির নন্দী ওরফে সুধির নট্টকেও দেখলাম। আজই তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া উচিত।”
পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ সুধিরের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, “ফ্যাসিবাদ ও জামায়াত যখন একসাথে, তখন নতুনভাবে ভাবতে হবে কিভাবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সফলতা ধরে রাখা যায়। এভাবে চলতে থাকলে আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা দল বদলে আবারও অপতৎপরতা শুরু করবে।”