
শুরু করছি ওই সমস্ত পশুর থেকেও অধম নৃশংস হত্যাকারী অমানুষ, সন্ত্রাসীদের প্রতি পৃথিবীর সব থেকে তীব্র ঘৃণা এবং নিন্দা জানিয়ে।
এবার আমার প্রশ্ন মোদীজির কাছে ! এতো চৌকষ কমাণ্ড,মিলিটারি, পুলিশ কোথায় ছিল। এতো জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় পৃথিবীর অন্যতম একটি টুরিস্ট এলাকায় কেন সেরকম নিরাপত্তা বেবস্থা ছিল না। ওখানকার মানুষ বলছে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে সন্ত্রাসীরা গোলাগুলি করে কিন্তু সরকারি কোনো বাহিনী সেখানে তখনও যায়নি, গেছে তার পরে। তাদের গোয়েন্দা কি করছিলো। কেন কিছুই আঁচ করতে পারলো না।
হিন্দি মুভিতেতো ঋত্বিক রোশন আর সালমান খান একাই সব সন্ত্রাসীদের রুখে দেয়, তাদের সব পরিকল্পনা বানচাল করে দেয়।
সন্ত্রাসীরা যেমন শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে নিরীহ মানুষ মেরেছে ঠিক উল্টোটা করেছে ওখানকার সরলসোজা সাধারণ মানুষ যারা জাত-পাত, ধর্ম-গোষ্ঠীর তোয়াক্কা না করে হামলায় আহতদের ঘাড়ে করে পাহাড় বেয়ে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার বেবস্থা করেছে। সাজাদ আহমেদের নাম সবাই এখন জেনে গেছেন, তার ভাষায় শুধু উনি একা নয় উনার মতো অসংখ সাধারণ মানুষ ভিক্টিমদের রেসকিউ করেছেন।
তাছাড়া ওখানকার বাসিন্দা সৈয়দ আদিল হুসেইন শাহ যিনি সন্ত্রাসীদের অনুরোধ করেছিলেন টুরিস্টদের না মারতে, কারণ তারা উনাদের তথা কাশ্মীরের মেহমান, কিন্তু সন্ত্রাসীরা সেটা শোনেনি, তখন আদিল শাহ চেষ্টা করেছিলেন সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করতে কিন্তু সন্ত্রাসীরা তাকেই গুলি করে হত্যা করে !!
নাজকাত আলী যিনি ৩৬ গড়ের ৪ পরিবারের ১১জন সদস্যকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়া কাশ্মীরকে এক আতঙ্কের জায়গা হিসাবে উপস্থাপন করেছে এবং সেখানকার মানুষদেরকে সন্ত্রাসীর তকমা দিয়েছে, কিন্তু ওখানকার মানুষ ওই সাজাদ, আদিল শাহ, নাজকাত আলীরা বা ট্যাক্সিওয়ালারা যারা বিনা পয়সায় বিপদে পড়া মানুষদেরকে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন এগুলিই ওখানকার মানুষের আসল পরিচয়। যদিও সন্ত্রাসীরা হিন্দু ধর্মালম্বীকে টার্গেট করে মেরেছে কিন্তু জীবন শুধু হিন্দুদেরই যায়নি কারণ বিভিন্নরিপোর্টে দেখা যায় মৃতের মধ্যে অনেক মুসলমানও আছে।
একজন মুসলমান হিসাবে আমি ছোটবেলা থেকে জেনে এসেছি নিরীহ -নিরাপরাধ একজন মানুষকে খুন করা মানে সারা মানব জাতিকে খুন করা, যেই কথাটি ওই সাজাদ ভদলোকের মুখ থেকেও শোনা গেছে, উনি বলেছেন ওই ঘটনা “সারে ইন্সানিয়াতকি খুন”. যারা নিজেদেরকে মুসলমান হিসাবে দাবি করেন তারা ওই সমস্ত আদিল, সাজাদ বা নাজকাত অলিদের কাছ থেকে শিখুন।
আর যারা ওই সমস্ত অমানুষ, হিংস্র, গান্ধা মুসলমান নামধারী কুকুকরের থেকেও অধম সন্ত্রাসী এবং তাদের মদদকারী, তারা জেনে রাখ তোদের উদ্দেশ্য এখানে পুরাটাই ব্যর্থ, কারণ তোদের এই অমানষিক এবং অমানবিক কর্ম কাশ্মীরের সাধারণ মানুষদেরকে আরো মানবিক, আরো শক্তিশালী করবে এবং তাদের সাথে তাদের ভিন্নধর্মী বা ভিন্ন বর্ণের/জাতের দেশি ভাইবোনের সম্পর্ক আরও জোরদার করবে।
মনে আছে, টরন্টোর পাশে রেক্সডেল মসজিদে এক নিরীহ মুসল্লিকে এক সন্ত্রাসীর বিনা কারণে ছুরিকাঘাত করে হত্যার কথা। তাকে হত্যা করা হয় কারণ সে একজন মুসলমান ছিল, কিন্তু সেই হত্যা কি ওই সন্ত্রাসীর মুসলমানদেরকে ওই মসজিদে যাওয়া বন্ধ করতে পেরেছে, না পারেনি বরং বেড়েছে, আমি নিজেই এখন শুধুমাত্র ওই মসজিদেই যাই।
সরকারি সাহায্য এসেছে পরে, কিন্তু কেন। মোদী বা অমিত শাহ কি ইচ্চ্ছা করেই ধীরে চলেছেন !! চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে, মনে হচ্ছে উনারা এখন সেই রকম করছেন। তীব্র নিন্দা, পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি, চিরুনি অভিযান, সন্ত্রাসীদের আস্তানা গুড়িয়ে দেওয়া এসব কথা এখন কেন ! ২৬টি জীবন কি ফিরে আসবে ? “Prevention is better than cure” কিন্তু উনারা যেন শুধু Cure নিয়েই চিন্তা করেন।
এই যে বোম্বে এট্যাক, দিল্লি এট্যাক এইসব ঘটনায় তো অনেককেই ধরেছেন তাদের নিয়ে গবেষণা করে কি জানতে চেষ্টা করেছেন এই সন্ত্রাসীরা কিভাবে বা কেন এইরকম পশুর থেকে অধম কাজে লিপ্ত হন।কিভাবে আপনাদের চৌকষ নিরাপত্তাকে অঙ্গুলি দেখিয়ে প্রায়ই এই রকম নৃশংস কান্ড ঘটিয়ে যায় ! প্রতিবেশী কোনোদেশ বা বাইরের কেউ এগুলি করেছে বলে বসে বসে আঙ্গুল চুষলে এগুলি কি বন্ধ হবে বা নিহত নিরীহ প্রানগুলি কি ফিরে আসবে !
আমি তো বলতে গেলে জন্মের পর থেকে আপনাদের ব্লেম গেম শুনে আসছি, কিন্তু সমস্যা সমাধান না করে সমস্যা নিয়ে আপনারা শুধু রাজনীতিই করে যাবেন, আর সাধারণ মানুষ তার খেসারত দিবে।
ব্রিটিশ ভারতবর্ষকে একের পিছে আর একজন লাগার যে পন্থা করে দিয়ে গেছে সেই বড়ি খেয়ে বাংলাদেশী, পাকিস্তানী, ইন্ডিয়ান রাজনীতিবিদরা সেই ৪৭ থেকে একের পাছায় আরেক জন লেগেই আছে !!!!!
ভারত, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান এসব দেশের সরকার বা রাজনীতিবিদদের উচিত নিজেদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কোনো ধররণের বিচ্ছিন্নতাবাদী বা আতঙ্কবাদীদের মদদ না দেওয়া !
সব শেষে মোদী-অমিত সরকারকে অনুরোধ করছি ব্লেম গেম গা রাজনীতি না করে এই হামলার সঠিক তদন্ত করে, এরা কেন করেছে, কারা পিছনে ছিল, তারা দেশের ভিতরের কেউ না কি বাইরের, যদি বাইরের হয় তাহলে বর্ডার থেকে ৩/৪ শত কিলোমিটার দূরে কিভাবে নিরাপদে অত দূরে এসে এট্যাক করলো। এগুলি বের করে এর পিছনে জড়িত প্রতক্ষ বা পরোক্ষ সবাইকে কঠোর বিচারের আওয়াতায় আনুন। বিচারের নামে নাটক সাজিয়ে কোনোমতে ধামাচাপা দিবেন না, তাহলে ওই সমস্ত নিরীহ মৃত মানুষদের সাথে বেইমানি করা হবে।
স্কারবোরো, কানাডা