16.2 C
Toronto
বুধবার, মে ১৪, ২০২৫

জীবনযাত্রার ব্যয়ে এশিয়ায় সবার শীর্ষে যে দেশ

জীবনযাত্রার ব্যয়ে এশিয়ায় সবার শীর্ষে যে দেশ - the Bengali Times

এশিয়ায় বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয় সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে। দেশটিতে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ২৫ শতাংশ। সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ রকম তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে।

- Advertisement -

‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক’ বা ‘এশিয়ায় উন্নয়ন পূর্বাভাস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার ৪৬টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতিই সর্বোচ্চ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে দেশটি এশিয়ায় নিচের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে আছে।

গত বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত এডিবির সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি হবে ২৫ শতাংশ, যা গোটা এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। এর ফলে পাকিস্তান এশিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশে পরিণত হবে। আগামী অর্থবছরে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি কমবে। তবে তা ১৫ শতাংশ হবে বলে এডিবি মনে করে।

এডিবির পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ায় মূল্যস্ফীতিতে পাকিস্তানের পেছনে, অর্থাৎ দ্বিতীয় স্থানে থাকবে বাংলাদেশ। চলতি বছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি হবে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোয় এ বছর মূল্যস্ফীতির হবে শ্রীলঙ্কায় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, নেপালে ৬ দশমিক ৫, ভারতে ৪ দশমিক ৬, ভুটানে ৪ দশমিক ৫ ও মালদ্বীপে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। প্রসঙ্গত, পাকিস্তান সরকার ও স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (এসবিপি) চলতি অর্থবছরের জন্য মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ২১ শতাংশ।

মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনেও পাকিস্তান বেশ পিছিয়ে আছে এবং ভবিষ্যতেও সে রকমই থাকবে। এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে দেশটির অর্থনীতিতে ১ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে, যা এশিয়ায় চতুর্থ সর্বনিম্ন। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পেছনে রয়েছে শুধু মিয়ানমার, আজারবাইজান ও নাউরু। আর আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে হবে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। সেটি হবে এশিয়ায় পঞ্চম সর্বনিম্ন হার।

আঞ্চলিক বিবেচনায় চলতি ২০২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ার সাত দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান একেবারে তলানিতে। তাদের সঙ্গে রয়েছে কেবল শ্রীলঙ্কা (১ দশমিক ৯ শতাংশ)। এডিবির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে এবার ভারতে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ, বাংলাদেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ১ শতাংশ, মালদ্বীপে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, ভুটানে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ ও নেপালে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুরবস্থা নিয়ে এডিবি বলেছে, দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে স্ট্যাগফ্লেশন (নিম্ন প্রবৃদ্ধি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও প্রবল বেকারত্ব) পরিস্থিতি চলছে। বিশ্বব্যাংকও গত সপ্তাহে বলেছিল, যেকোনো বিরূপ প্রভাবে পাকিস্তানের আরও ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়তে পারে। দেশটিতে ইতিমধ্যে প্রায় ৯৮ মিলিয়ন বা ৯ কোটি ৮০ লাখ লোক দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন যাপন করছে।

সর্বশেষ প্রতিবেদনটিতে এডিবি বলেছে, পাকিস্তানের পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থায়নের প্রয়োজন। কিন্তু দেশটি বাইরে থেকে নতুন ঋণ পাওয়া এবং বিদ্যমান ঋণ পরিশোধ নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে দেখা করতে আগামী সপ্তাহে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেবের যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে যাওয়ার কথা। তখন তিনি আইএমএফ প্রধানকে পাকিস্তানের জন্য নতুন আর্থিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজ অনুমোদনের অনুরোধ জানাবেন।

সূত্র: ইকোনমিক টাইমস

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles