
২০০১ সালে আমার মেয়ে জন্মগ্রহণ করার পর এক ঘোষণায় ধূমপান ছেড়ে দিয়েছিলাম। এর আগ পর্যন্ত চেইন স্মোকার ছিলাম। ২০ বছর হয়ে গেলো। আমি ধূমপান ছেড়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। এর পর কয়েকবার ইনহেল করা ছাড়াই ধূমপান করেছি। সেটি ছিল just for show । আমি আর ধূমপান আসক্তিতে ফিরে যাই নাই। এখন আমার অনুভূতি নন-স্মোকারদের মত। ধূমপায়ীদের আশে-পাশে থাকলে অসস্থি লাগে।
স্মোকারদের ধোঁয়া সয্য করতে পারি না।
ধূমপান ছেড়ে দেওয়া একদিক দিয়ে কঠিন, আবার অন্য দিক দিয়ে খুব একটা কঠিনও না। নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগাতে হয়। বলতে হবে, আর ধূমপান করবো না। এই অতি সহজ বিষয়টিই অনেকের কাছে খুবই কঠিন। ইচ্ছা শক্তির তারতম্যের কারনে অনেকের কাছেই ধূমপান ছেড়ে দেওয়া কঠিন। অনেকেই ধূমপান ছেড়ে দিবো,এমন ভাবতেই পারে না।
তবে আমি অদ্ভুতভাবেই পেরে গেছি।
এখন আমার দ্বিতীয় আসক্তি থেকে মুক্তির চেষ্টা করছি। সেটি হচ্ছে, ফেসবুকের আসক্তি। এই আসক্তি বড় ক্ষতির কারন হচ্ছে। মন সব সময় এখানে নিযুক্ত থাকে। কে কি করলো, না করলো। কি কমেন্ট করলো এই সব চিন্তা মনকে occupy করে রাখে। দিন এবং রাতের অধিকাংশ সময় মস্তিস্ক জুড়ে থাকে ফেসবুক। অনেক সময়ের অপচয় হচ্ছে। ফ্যামিলি মেম্বারদের যে পরিমান সময় দেওয়া উচিত, তারা আশাও করে আমার কাছে, সেই সময় থেকে আমি তাদের বঞ্চিত করছি বলে আমার কাছে মনে হয়। বিষয়টি অবশ্যই অন্যায়।
ফেসবুকীয় সম্পর্ক বায়োবীয়। আজ যে বন্ধু কাল সে শত্রুতে পরিনত হচ্ছে, আবার আজ যে শত্রু সে বন্ধুতে রূপ নিচ্ছে। নীতিহীন,আদর্শহীন সম্পর্কে বিশ্বাসী নই।
আমি এই আসক্তি থেকে বের হতে চাচ্ছি। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।২০ বছর আগে ধূমপান ছেড়ে দিতে পেরেছিলাম। তাই আমি জানি আমার মধ্যে একটা প্রবল ইচ্ছাশক্তি আছে।
বহু আগে বলেছিলাম টুকিটাকি লেখালেখি করি নিজের জন্যই। লেখতে ভালো লাগে। কেউ লেখা পছন্দ করলে ভালো লাগে অবশ্যই। এই টুকুই।
কমিউনিটিতে গভীরভাবে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা, কোন রকম কৃতিত্ব নেওয়া, নিজেকে জাহির করা, এই সব বিষয় থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছি।
যাদের নেতা হবার ইচ্ছা আছে, যারা এদেশের রাজনীতি করবেন কিংবা কমিউনিটির কিছু হতে চান, তাদের জন্য এই সব কর্মকান্ড সাজে। আমার জন্য একেবারেই সাজে না। আমি অনেকটাই ছাপোষা টাইপের মানুষ। সব সময় শান্তিপ্রিয়,ঝামেলামুক্ত থাকতেই ভালোবাসি।
তবে মানুষকে ভালোবাসি। তাদের জন্য ভালো কিছু করতে চাওয়ার সংগ্রামে যুক্ত থাকবো সর্বদা। তবে শর্ত থাকবে, ভালো চাওয়ার সংগ্রামটা হতে হবে সবাইকে নিয়ে। ভিন্নতার মাঝে অভিন্নতার সংগ্রামে যুক্ত থাকবো সবর্দা।
আপাতত ফেসবুক আসক্তি থেকে বের হয়ে আসার সংগ্রামে লিপ্ত আছি এই সংগ্রাম নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়া ।